ঢাকা শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫

ইলিশ চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:৪৮ দুপুর

পটুয়াখালীর গলাচিপায় ইলিশ মাছ চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে চরবিশ্বাস ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাসান সরদারের বিরুদ্ধে। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরমহিরউদ্দিন এলাকায় ওয়াপদা নতুন সুলিজে এ ঘটনা ঘটে।

নির্যাতনের শিকার দুজন শিশু- আবদুল্লাহ (১০), মির্জাগঞ্জ উপজেলার মহিষকাটা এলাকার বাসিন্দা, ও সাব্বির (১৪), চরবিশ্বাস চরআগস্তি এলাকার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, শিশু দুটিকে হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে রাস্তায় বসানো হয়েছে। তাদের হাতে ধরা মাছ ইলিশ। ছবি ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

পরিবারের ভাষ্যমতে, গত রবিবার রাতে স্থানীয় এক জেলে জয়নালের নির্দেশে নদীতে মাছ ধরতে যায় দুই শিশু। তারা রাতটা নৌকায় কাটায়। সোমবার সকালে মাছ ব্যবসায়ী ইমরান বয়াতির গদি থেকে ১০টি ইলিশ চুরির অভিযোগ তুলে দুই শিশুকে ধরে বাজারে নিয়ে আসা হয়।

এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসান সরদার তাদের মারধর করেন বলে অভিযোগ। পরে দুই শিশুর হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে রাস্তায় বসিয়ে রাখা হয়। সূর্যের দিকে মুখ তুলে বসিয়ে হাতে মাছ দিয়ে ছবি তোলা হয় এবং তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

সাব্বিরের নানা শাহজাহান প্যাদা বলেন, আমার নাতিকে রৌদ্রে শুইয়ে, হাতে মাছ দিয়ে ছবি তুলে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবাদ করায় আমাকে গালাগাল করে, হুমকি দেয়। পরে ১০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা দাবি করা হয়। অনুরোধ করলে ৫ হাজার টাকায় ছাড় দেয়। আমরা গরিব মানুষ, তাই কাগজে স্বাক্ষর রেখে ছাড়া পায়।

শিশু আবদুল্লাহ জানায়, “তাদের নৌকা থেকে ধরে বাজারে এনে মারধর করা হয়। তারপর রশি দিয়ে বেঁধে রাস্তায় বসিয়ে ছবি তোলে। ইউপি সদস্য হাসান সরদার বলেন, “ওদের কাউকে মারধর করা হয়নি। কেবল মাছের টাকা চাওয়া হয়েছিল। টাকা না থাকায় সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

মাছ ব্যবসায়ী ইমরান বয়াতি বলেন, ওরা রাতে আমার গদি থেকে মাছ চুরি করেছে। পালিয়ে যেতে পারে, তাই হাত-পা বেঁধে রাখা হয়। চোর প্রমাণ করতে হাতে মাছ দিয়ে ছবি তোলা হয়েছে। তবে চুরির অভিযোগে শিশুদের পুলিশের কাছে না দিয়ে স্থানীয়ভাবে নির্যাতনের বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে এলাকাজুড়ে।

গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশাদুর রহমান সাংবাদিকদেরকে বলেন, “ঘটনার তদন্তে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Link copied!