পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের ভারতের সীমান্তঘেঁষা অঞ্চলে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দিনের সহিংস সংঘর্ষে অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে সীমিত খবরই বাইরে আসছে। মুজাফফরাবাদে সোমবার প্রথম হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। তারা রাজনৈতিক নেতাদের বিনা খরচে বিদ্যুৎ ও দামি গাড়ির মতো বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধা চালু রাখার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানায়। উচ্চ পর্বতমালার এ উপত্যকাজুড়ে ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং স্থানীয় গণমাধ্যমকে দৈনিক বিক্ষোভের খবর প্রকাশে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ। এএফপির প্রতিবেদকরা বুধবার (১ অক্টোবর) রাস্তায় রক্তের দাগ, ছোড়া গুলির খোসা, ভাঙা কাচের টুকরো ও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পাথর দেখতে পান, যা সাম্প্রতিক অরাজকতার সাক্ষ্য বহন করছে। ৫১ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী আসাদ তাব্বাসুম বলেন, এখানকার রাজনীতিকরা গ্যাংস্টারের মতো আমাদের মাথার ওপর শাসন চালাচ্ছে। আমরা তাদের বিদায় চাই, তাদের এই সুবিধাগুলো বাতিল চাই।তাদের আমাদের কাতারে দাঁড়ানো উচিত। বিক্ষোভ ঠেকাতে মুজাফফরাবাদের রাস্তায় বিপুলসংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ভিড় সামলাতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। একসময় বিক্ষোভকারীর সংখ্যা ছয় হাজারে পৌঁছায়। আজাদ কাশ্মীর সরকার বুধবার এক বিবৃতিতে জানায়, এ পর্যন্ত সোমবার থেকে ছয়জন সাধারণ মানুষ ও তিনজন পুলিশ নিহত হয়েছেন। এতে আরও বলা হয়, সহিংস বিক্ষোভে’ আহত হয়েছে ১৭০ জনের বেশি পুলিশ সদস্য ও ৫০ জন সাধারণ মানুষ। তবে বিক্ষোভ সংগঠকরা বলছেন, আহত সাধারণ মানুষের সংখ্যা ১০০ জনেরও বেশি। বিক্ষোভ নিয়ে এখনো পর্যন্ত সেনাবাহিনী কোনো বিবৃতি দেয়নি। পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর সমালোচনা এক ধরনের নিষিদ্ধ বিষয়। দেশটি দীর্ঘ দশক ধরে সামরিক শাসনে ছিল এবং বিশ্লেষকদের মতে দক্ষিণ এশিয়ার এই রাষ্ট্রে প্রকৃত ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু এখনো জেনারেলদের হাতেই।
আপনার মতামত লিখুন :