নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাশিপুর এলাকায় অমানবিক নির্যাতনের শিকার চার বছরের শিশু হোসেনকে তালাবদ্ধ ঘর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় ঘরের তালা ভেঙে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় শিশুটির বাবা সোহেল পালিয়ে যায়।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শরিফুল ইসলাম।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সোহেল নিজের ছেলে হোসেনকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন। সোহেল কাশিপুর শান্তিনগর এলাকার মৃত মোমেন আলীর ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ২-৩ বছর আগে হোসেনের বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। পরে সোহেল জোর করে শিশুটিকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন। এরপর থেকে প্রায়ই শিশুটিকে ঘরে তালাবদ্ধ করে বাইরে চলে যেতেন তিনি। শিশুটি অধিকাংশ সময় অনাহারে থাকত, আর কান্না করলে মারধর করতেন সোহেল।
স্থানীয় ব্যবসায়ী শাওন বলেন, “দুই-তিন মাস আগে থেকেই আমরা শিশুটির নির্যাতনের বিষয়টি জানতে পারি। মাঝে মাঝে সোহেল তাকে জুস বা চিপস কিনে দিত, তবে বেশিরভাগ সময়ই মারধর করত। এমনকি এক নারী শিশুটির শারীরিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করলে তাকেও মারধর করেন সোহেল।” পরে সামাজিক সংগঠনের সহযোগিতায় বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শরিফুল ইসলাম জানান, শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রথমে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা শিশুটিকে নিজেদের তত্ত্বাবধানে নেন।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের শিশু সুরক্ষা সমাজকর্মী তাছলিমা আক্তার বলেন, “শিশুটি গুরুতর অপুষ্টিতে ভুগছে এবং শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। চিকিৎসা শেষে তাকে সরকারি ছোট মনি নিবাসে রাখা হবে।”
নারায়ণগঞ্জ সদর ইউএনও তাসলিমা নাসরিন বলেন, “শিশুটির সুচিকিৎসা ও সুরক্ষার সব ব্যবস্থা করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :