ঢাকা শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫

বরিশালের চরকবাই এলাকায় ডাকাত সন্দেহে কৃষককে পিটিয়ে হত্যা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০১:১৪ দুপুর

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরকবাই এলাকায় ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে সোহেল খান (৩৫) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে চরকবাই এলাকার একটি স্থান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সোহেল একই এলাকার নূর ইসলাম খানের ছেলে।

বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সোহেল খানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে তাকে গণপিটুনির মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য বা পরিকল্পনা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

নিহতের স্ত্রী সাজেদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, নীয় কয়েকজন ব্যক্তি আমার স্বামীকে মোবাইলে ফোন করে ডেকে নেয়। তারা আগে থেকে পরিকল্পনা করেই তাকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে হত্যা করেছে। জমি লিজ না দেওয়ায় তারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি স্থানীয় শাহিন হাওলাদার ও তার ভাই ফিরোজ হাওলাদারসহ কয়েকজন ব্যক্তি তরমুজ চাষের জন্য সোহেলের জমি লিজ নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পূর্বের লেনদেন নিয়ে বিরোধ থাকায় সোহেল জমি দিতে রাজি হননি। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তাকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, শনিবার রাতের দিকে চরকবাই এলাকার একটি মসজিদে মাইকিং করে সোহেল খানকে ‘ডাকাত’ হিসেবে চিহ্নিত করে ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপরই উত্তেজিত জনতা তাকে আটক করে বেধড়ক মারধর করে। গণপিটুনির একপর্যায়ে ঘটনাস্থলেই সোহেলের মৃত্যু হয়। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

নিহতের মেয়ে ফাতেমা আক্তার বলেন, গত বছর বাবার কাছ থেকে অভিযুক্তরা তরমুজ চাষের জন্য জমি বর্গা নিয়েছিল। কিন্তু লাভের টাকা বাবাকে দেয়নি। এবার জমি না দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে। আমার বাবার কোনো দোষ ছিল না। যারা তাকে মেরেছে, তাদের বিচার চাই।

ঘটনার পর অভিযুক্ত শাহিন হাওলাদার ও তার ভাই ফিরোজ হাওলাদার পলাতক রয়েছেন। তাদের মোবাইল নম্বরগুলোও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার পরপরই তারা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন।

বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, এটি নিছক একটি গণপিটুনির ঘটনা, নাকি জমি সংক্রান্ত পূর্ববিরোধ বা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, আমরা সব দিক বিবেচনায় তদন্ত করছি। অভিযুক্তদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

Link copied!