বিশ্বব্যাপী খ্যাতিমান চলচ্চিত্র উৎসবগুলো শুধু রুপালি পর্দার ঝলক নয়, বরং সময়ের জরুরি মানবিক ও রাজনৈতিক প্রশ্নগুলোরও প্রতিফলন ঘটায়। স্পেনের সান সেবাস্তিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ৭৩তম আসরেও ধরা পড়েছে সেই চিত্র।
এই বছর উৎসবটির সবচেয়ে আলোচিত মুহূর্তগুলোর একটি ছিল অস্কারজয়ী অভিনেত্রী জেনিফার লরেন্স-এর উপস্থিতি। তিনি তার নতুন ছবি ‘ডাই মাই লাভ’-এর প্রচারে আসেন, এবং একইসঙ্গে সম্মানজনক ডোনোস্টিয়া অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন যার মাধ্যমে তিনি এই পুরস্কারজয়ী সবচেয়ে কম বয়সী অভিনেত্রী হিসেবে ইতিহাস গড়েছেন।
কিন্তু শুধু চলচ্চিত্র নিয়েই থেমে থাকেননি লরেন্স। সংবাদ সম্মেলনে তিনি উপস্থিত হন একজন দায়িত্বশীল নাগরিক ও মানবতাবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে। গাজার চলমান সংকট নিয়ে স্পষ্ট ও জোরালো ভাষায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন: “আমি গভীরভাবে আতঙ্কিত। গাজায় যা ঘটছে, তা সরাসরি গণহত্যা। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমি ভাবি, আমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ কী? আমরা কি এমনই এক বিশ্ব তাদের জন্য রেখে যাচ্ছি?”
শুধু আন্তর্জাতিক ইস্যু নয়, নিজের দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন এই হলিউড তারকা। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি হওয়া বিদ্বেষ ও সহিংসতার পরিবেশ শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য মারাত্মক হুমকি। এই পরিস্থিতি আমাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে- বলেন তিনি।
জেনিফার লরেন্স তরুণদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও উদ্বিগ্ন। তার ভাষায়, “অনেক তরুণ-তরুণী এখন রাজনীতিতে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তারা মনে করে, রাজনীতিবিদরা শুধু মিথ্যা বলেন, তাদের মধ্যে সহানুভূতির ঘাটতি রয়েছে।”
তিনি মনে করিয়ে দেন, “পৃথিবীর এক প্রান্তে ঘটে যাওয়া অন্যায়কে আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না। কারণ, একদিন সেই অন্যায় আমাদের দোরগোড়ায়ও এসে দাঁড়াতে পারে।”
তবে লরেন্স এ-ও বলেন, সব দায় যেন শিল্পীদের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া না হয়। কারণ তারা নিজেরাও রাজনৈতিক ব্যাখ্যা-বিকৃতির শিকার হতে পারেন। আজ এমন সময় চলছে, যখন সত্য উচ্চারণ করাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। রাজনীতিকরা অনেক সময় কথার অপব্যাখ্যা করেন, যা বিপজ্জনক।
আপনার মতামত লিখুন :