ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

কুয়াকাটায় পতিতাবৃত্তির অভিযোগে জামায়াত নেতা বহিষ্কার

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:২০ রাত

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় নিজ বাড়িতে পতিতাদের আশ্রয় এবং এ কাজে সহযোগিতার অভিযোগে কুয়াকাটা পৌর জামায়াতে ইসলামীর ৫নং ওয়ার্ড সভাপতি গ্রাম ডা: আ. হালিমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ২১ ডিসেম্বর (রোববার) দলটির আয়োজিত বিশেষ রোকন বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কুয়াকাটা পৌর জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মো. শহীদুল ইসলাম। 
 
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী কুয়াকাটা পৌর শাখার সাবেক আমির মাওলানা মাঈনুল ইসলাম, লতাচাপলী ইউনিয়ন শাখার আমির মোঃ রাসেল মুসুল্লি, পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আল আমিন মৃধা, যুব জামায়াতের সভাপতি হেমায়েত উদ্দিন সিকদার এবং জামায়াতের ৩নং ওয়ার্ড সেক্রেটারি শাহাবুদ্দিন ফরাজি।
 
এছাড়াও কলাপাড়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, জামায়াতে ইসলামীর সদস্য কাজী জাহিদুল ইসলামকে  পতিতাদের দিয়ে হেনস্তা করে। এসময় স্থানীয় জনতা দুই পতিতাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
 
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পৌর জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন,অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশেষ রোকন বৈঠক আহ্বান করা হয়। বৈঠকে উত্থাপিত অভিযোগ ও প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে গ্রাম ডা: আ: হালিম অনৈতিক কাজের সহযোগিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। যা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতিমালা ও আদর্শ পরিপন্থী। তাই সাংগঠনিক শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আ. হালিমকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
 
কুয়াকাটা পৌর জামায়াতের সাবেক আমির আলহাজ্ব মাওলানা মোহাম্মদ মাঈনুল ইসলাম মন্নান বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শভিত্তিক সংগঠন। এখানে ব্যক্তির চেয়ে সংগঠনের আদর্শ ও নৈতিকতা গুরুত্বপূর্ণ। কোনো নেতার বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠলে তা দলীয়ভাবে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। সংগঠনের সুনাম ও আদর্শ রক্ষার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
 
কলাপাড়া উপজেলা জামায়াত ইসলামীর আমির মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম বলেন,
একটি অভিযোগের ভিত্তিতে বিশেষ রোকন বৈঠক ডেকে কুয়াকাটা পৌর ৫নং ওয়ার্ড সভাপতিকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলাম করতে হলে অবশ্যই সাংগঠনিক নিয়ম-কানুন ও দলীয় নীতিমালা মেনে চলতে হয়।
 
এ অভিযোগ অস্বীকার করে আ. হালিম বলেন, আমার বাসায় ছয়টি পরিবার ভাড়া থাকে। এর মধ্যে একটি বাসায় মা-মেয়ে পরিচয়ে চারজন নারী দুই মাস আগে ভাড়া নেয়। তারা কোথায় কী কাজ করে, তা আমার জানার বিষয় নয়। আমার সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। বিষয়টি নিয়ে আমি শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করবো। 
 
তবে গ্রাম ডা: হালিম অনৈতিক কাজের সহযোগিতার বিষয়টি অস্বীকার করলেও মুসুল্লীয়াবাদ সিনিয়র মাদ্রাসার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক এবং পার্শ্ববর্তী লোকজন সাংবাদিকদের জানান হালিম চার বছর ধরে পতিতাদের কাছে বাসা ভাড়া দিয়ে আসছে। তার বাসা রাতের বেলা পতিতালয় হয়ে যায়। পাশেই মাদ্রাসা ও স্কুল থাকায় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের যা নজরে আসে। এ বিষয়ে স্থানীয়রা সতর্ক করলেও তিনি তা অগ্রাহ্য করেছে। 

Link copied!