সালমান এফ রহমানের ছেলে-ভাতিজার ১৪৭৯ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৪ মে, ২০২৫, ০৫:১৩ বিকাল

যুক্তরাজ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান তদন্তে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা ও বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠাতা সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং তার ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের মালিকানাধীন প্রায় ৯ কোটি পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১,৪৭৯ কোটি টাকা) মূল্যের সম্পত্তি জব্দ করেছে দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানানো হয়, মোট নয়টি ফ্রিজিং অর্ডারের মাধ্যমে এই সম্পত্তিগুলো জব্দ করা হয়, যাতে সংশ্লিষ্টরা এসব সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করতে না পারেন। এসব সম্পত্তি ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, আইল অব ম্যান ও জার্সিতে নিবন্ধিত অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা হয়।

জব্দ করা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে লন্ডনের অভিজাত এলাকায় অবস্থিত ১৭ গ্রোসভেনর স্কয়ারের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট, যেটি ২০১০ সালে কেনা হয় ৬.৫ মিলিয়ন পাউন্ডে। একইভাবে, উত্তর লন্ডনের গ্রেশাম গার্ডেন্স এলাকায় ১.২ মিলিয়ন পাউন্ডে কেনা হয়েছে একটি বাড়ি, যেখানে যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের মা শেখ রেহানা একসময় বসবাস করতেন বলে রেকর্ডে উল্লেখ আছে।

এনসিএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সম্পত্তিগুলোর বিরুদ্ধে একটি বেসামরিক তদন্ত চলছে এবং সুরক্ষামূলক ফ্রিজিং অর্ডার জারি করা হয়েছে। সংস্থাটি নিশ্চিত করেছে যে আরও তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানান, সালমান এফ রহমান ও তার ছেলে শায়ান রহমান দেশের একটি চলমান দুর্নীতির মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউকে-এর নীতি পরিচালক ডানকান হেমস যুক্তরাজ্য সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব সব বিতর্কিত সম্পদ জব্দ করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।” এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে বেক্সিমকো গ্রুপের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে শায়ান রহমানের একজন মুখপাত্র আগেই বলেছিলেন, তার মক্কেল যেকোনো অনিয়মে জড়িত থাকার কথা জোরালোভাবে অস্বীকার করেন এবং যুক্তরাজ্যে যেকোনো তদন্তে সহযোগিতা করবেন।

উল্লেখ্য, সালমান এফ রহমান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন এবং বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পর, গত বছরের ছাত্র ও জনতার বিক্ষোভের সময় তিনি দেশত্যাগের চেষ্টা করেন এবং তখনই তাকে আটক করা হয়।

Link copied!