কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি।। পুণ্যলাভের আশায় কুয়াকাটা সমুদ্রের নীল জলে শুক্লপক্ষের অক্ষয় তৃতীয়ায় হাজারো সনাতন ধর্মাবলম্বীরা গঙ্গাস্নান করেছেন। বুধবার ১০টায় উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে স্নান করেন তারা। একই সাথে সনাতনী নারীরা সৈকতে মোম আগবাতী জ্বালিয়ে ধান, দূর্বা, ডাব, হরিতকি, তেল,সিঁদুর সমুদ্রের জলে অর্পণ করেছেন। এ সময় হিন্দু নারীদের উলুধ্বনি ও ডংকার শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে সৈকত এলাকা। অনেকেই ব্যস্ত পূজা করতে।
আবার অনেকেই পূজা শেষে সাগরের নোনা জলে নেমে পড়ে সমুদ্র স্নানে। পুড়ো সৈকত জুড়েই ছিল ভক্তদের পদচারণা। তাদের বিশ্বাস, অক্ষয় তৃতীয়াতে গঙ্গাস্নান করলে জীবন থেকে দুঃখ, রোগব্যাধি একেবারে মুছে যাবে এবং জীবন সুখ সমৃদ্ধিতে ভরে উঠবে। এর আগে কুয়াকাটা শ্রী শ্রী রাধা কৃষ্ণ মন্দিরে প্রার্থনা, মঙ্গলঘাট স্থাপন, শ্রী শ্রী বিষ্ণ পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
এসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক হরিভাবনামৃত সংঘ ও আশ্রম’র প্রতিষ্ঠাতা প্রাণপুরুষ শ্রী শ্রী জয়দেব ঠাকুর। বিশেষ অতিথী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরের সহধর্মিণী জগৎমাতা হরপ্রিয়া দেবী ও পরম পূজ্যপাদ ঋত্বিক মহারাজ ডা.রাধাস্বামী।
প্রতিবছর ন্যায় এ বছরও দূর-দূরান্ত থেকে সাধু, সন্ন্যাসী ও সানাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ গঙ্গাস্নানে আসেছেন বলে আয়োজকরা জানান। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা জানান, অক্ষয় তৃতীয়া দারুন শুভ ও মাহাত্ম্যপূর্নে একটি দিন। এই দিন মা ল²ীর আরাধনা করা হয়ে থাকে। আর যে কোন শুভ কাজ করার জন্য এই দিনটি বিশেষ করে শুভ। সনাতন শাস্ত্র আনুসারে বৈশাখ মাসে শুক্লাপক্ষে তৃতীয়া তিথিতে অক্ষায় তৃতীয়া পালিত হয।
আগত পুণ্যার্থী সাগর বিশ্বাস জানান, এই দিন গঙ্গাস্নান করলে পুণ্য অর্জন হয়। তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে অক্ষায় তৃতীয়াতে কুয়াকাটা এসে গঙ্গা স্নান করলাম। অপর এক পুণ্যার্থী অনিমেষ সরকার জানান, এই দিনটির জন্যই অপেক্ষায় ছিলাম । অনেক দূর থেকে এসে পরিবার পরিজন নিয়ে অন্যের আশায় স্নান করলাম। পুণ্যার্থী সাগরীকা রানী বলেন, সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভের আশায় ধর্মীয় সব নিয়ম পালন শেষে সমুদ্রের জলে ধান,দূর্বা, ডাব, হরিতকি, তেল,সিঁদুর অর্পণ করে স্নান করেছেন।
কুয়াকাটা শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক শ্রী নিহার রঞ্জন জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এ ববছরও এই অক্ষয় তৃতীয়ার অনুষ্ঠানটি যাথাযথ্য মর্যাদায় পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপক ভক্তবৃন্দ কুয়াকাটার সৈকতে জমায়ে হয়েছে।
মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো.তরিকুল ইসলাম জানান, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ভীর বেড়েছে। তাই তাদের বাড়তি নজরদারি ছিল। এছাড়া সাদা পোশাকে পুলিশ সহ ট্যুরিস্ট পুলিশের একাধিক টিম কাজ করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :