আজ ২২ অক্টোবর, ২০২৫ বুধবার, বিকাল ৪:০০ টায় মিরপুরস্থ রূপনগর শিয়াল বাড়ী’র অগ্নিদগ্ধ কারখানা (আলম ট্রেডিং কেমিক্যাল গোডাউন, স্মার্ট ডিজাইন এন্ড প্রিন্টিং লিঃ, জেএসকে নীট ফ্যাশন ও আরএন ফ্যাশন)-এর ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ গার্মেন্টস শ্রমিকদের বকেয়া মজুরী ও নিহত শ্রমিক পরিবারকে আজীবন আয়ের সমপরিমাণ (লস-অব আর্নিং) এর ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহতদের সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা ও দায়ীদের বিচারের দাবীতে গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন (এইএডঋ) ও ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার (ঘডটঈ) এর যৌথ উদ্যোগে শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ ও র্যালী’ অনুষ্ঠিত।
গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন (এইএডঋ) ও ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার (ঘডটঈ) এর সভাপতি মোসাঃ সুলতানা বেগম এর সভাপতিত্বে এবং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইলিয়াস এর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার (ঘডটঈ) এর দপ্তর সম্পাদক আমরিন হোসাইন এ্যানি, প্রচার সম্পাদক তাহেরুল ইসলাম, নিহত শ্রমিক মার্জিয়া সুলতানার বাবা সুলতান, আরএন ফ্যাশনের শ্রমিক কাটিং মাস্টার নাজমুল,লাইন চীপ-নজরুল ইসলাম, কোয়ালিটি-মৌ আক্তার, অপারেটর-স্বপ্না বেগম, আয়রনম্যান জাহিদ, ক্লিনার-মমতাজ, আল-মামুন-কাটিংম্যান, অপারেটর- মিনার হোসেন, হেলপার- মোঃ হোসাইন, আরএনফ্যাশনের আহত শ্রমিক নুরুন্নহার, স্মার্ট ডিজাইনের ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিক মিম আলো শিলা, উদ্ধারকর্মী মিনা আক্তার, মার্জিয়া, সোনিয়া আক্তার, নাজনীন আক্তার, নাঈম, নাজমা বেগম, কলি আক্তার প্রমুখ।
সংহতি বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস এন্ড স্যুয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু, গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি শবনব হাফিজ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন ঢাকার মিরপুরে সাম্প্রতিক আগুনের ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু কাঠামোগত হত্যাকান্ড। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার পেছনে মূল কারণগুলো স্পষ্ট-নিরাপত্তাহীন ভবন, অবৈধভাবে রাখা রাসায়নিক গুদাম, এবং অকার্যকর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। অগ্নিকান্ডের স্থানের কারখানা ভবনগুলির ঘনত্ব এবং কাঠামো থেকে কোন ভবনকেই শিল্প কারখানা হিসাবে গণ্য করা যায় না। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), কলকারখানা পরিদর্শন প্রতিষ্ঠান (ডাইফ) এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার অগ্নিনির্বাপন সনদ প্রদানের দায়িত্বপালনকারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিরা কেউই তাদের দায়িত্ব পালন করেনি। কারখানায় রাসায়নিক গুদামসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনার কারণে অতীতেও বিপুল সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এবং সবসময়ই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছেন শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের কর্মজীবীরা। এই হত্যাকান্ডের বিচার ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শিল্প কারখানায় অগ্নিকান্ডের প্রায় প্রতিটি ঘটনার পরে শোনা যায় যে কারখানাটির অগ্নিনির্বাপণ সনদ বা কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে। সুরক্ষিত এলাকায় প্রয়োজনীয় অনুমোদন ছাড়া কিভাবে কারখানা ভবন গড়ে উঠতে পারে? ১৬ জন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন, দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং অসংখ্য শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এই অগ্নিকান্ড আর শ্রমিকের মৃত্যু এটি কোন দুর্ঘটনা নয় এটি মালিকদের অবহেলা ও নিরাপত্তাহীন কর্মপরিবেশের ফল।
দাবিসমূহ:
১. ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে।
২. নিহতদের পরিবারকে (লস-অব আর্নিং)-এর ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ প্রদান।
৩. আহতদের সু-চিকিৎসার নিশ্চিত কর।
৪. নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত কর।
৫. দ্রুততম সময়ে ক্ষতিগ্রস্থদেও যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৬. অতিদ্রুত দায়ীদের চিহ্নিত ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৭. নিহতের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ কর।
৮. শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা মানদন্ড কঠোরভাবে প্রয়োগ কর।
৯. শ্রমিকদের ফায়ার ড্রিল, খোলা নির্গমনপথ ও কার্যকর অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম নিশ্চিত কর।

আপনার মতামত লিখুন :