ঢাকাই সিনেমার নব্বইয়ের দশকের চিত্রনায়িকা বনশ্রী মারা গেছেন। মঙ্গলবার সকাল মাদারীপুর জেলার শিবচড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ৯০ দশকের জনপ্রিয় নায়িকা হয়েও শেষ সময় জীবন যাপন করেছেন বস্তিতে। আর সেই বস্তিতে জীবনের অবসানের ইতি টানতে হল।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করছেন বস্তিতে থাকা রুবিনা বেগম নামের এক নারী। তিনি জানান, বনশ্রী আপা অনেকদিন ধরে বেশকিছু অসুখে ভুগছিলেন। আজ তিনি মারা গেছেন। আজই বাদ আসর তাকে মাদারীপুর দাফন করা হবে।
আরো বলেন, নায়িকা আপা গত পাঁচদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার অনেক রোগে সমস্যা হৃদরোগ, কিডনির সমস্যাসহ একাধিক ব্যাধি ছিল। তিনি নায়িকা আপা এভাবে চলে যাবে এটা আসলে আমরা ভাবতে পারিনি তিনি আমাদের সবসময় ছোট বোনের মতই দেখতেন। তার চলে যাওয়ার আগে অনেক কষ্ট করেছেন। এক সন্তান রেখে গেছেন। তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।’
স্থানীয় মুরুব্বী আজিবার মুন্সি বলেন, বাদ আছরের পরে তার জানাজার শেষে শিবচর পৌরসভা গোরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
এ বিষয়ে শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ. এম. ইবনে মিজান বলেন, আমরা তার মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি।
উল্লেখ, শিবচরের মাদবরের চর ইউনিয়নের মেয়ে বনশ্রী। ইউনিয়নের শিকদারকান্দি গ্রামে জন্ম তার। বাবা মজিবুর রহমান মজনু শিকদার ও মা সবুরজান রিনার দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে বনশ্রী বড়। সাত বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে রাজধানী ঢাকায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন তিনি।
১৯৯৪ সালে ‘সোহরাব রুস্তম’সিনেমা দিয়ে রুপালি পর্দায় অভিষেক ঘটে বনশ্রীর। নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের বিপরীতে ছবিটি ব্যবসা সফল হয়। পরিচিতি পান বনশ্রী। এরপর আরও গোটা দশেক সিনেমায় অভিনয় করেন।
নায়ক মান্না, আমিন খান, রুবেলের বিপরীতেও নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন বনশ্রী। রুপালি পর্দার মতো জীবনও হয়ে ওঠে আলো ঝলমল।
তবে খুব বেশিদিন সেই সুখ সয়নি বনশ্রীর কপালে। ভাগ্যদোষে ছিটকে পড়েন তিনি সিনেমা থেকে। পথে পথে ঘুরে দিন কেটেছে তার। থেকেছেন বস্তিতেও। তার দুই সন্তান ছিল। তার মধ্যে মেয়েটি ছিনতাই হয়ে গেছে। রেখে গেছেন কেবল এক পুত্রকে।
আপনার মতামত লিখুন :