খালেদ মোশাররফ সোহেল, জেলা প্রতিনিধি, বরগুনা।। বরগুনার তালতলী উপজেলায় নিজেকে কখনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ঘনিষ্ঠ, আবার কখনো দৈনিক কালবেলা পত্রিকার প্রতিনিধি পরিচয়দানকারী নাঈম ইসলামের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা, ইয়াবা লেনদেন এবং বিভিন্ন যুবককে প্রলোভন দেখিয়ে মাদকে জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হওয়ায় তাকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাদকের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষ জানায়, নাঈম ইসলামকে গত ১ ডিসেম্বর থেকেই পত্রিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় ২নং ছোটবগী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের সাধারণ মানুষের উদ্যোগে এ মানববন্ধন আয়োজন করা হয়। এতে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, নাঈম ইসলাম ‘দৈনিক কালবেলা’ পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা ও সরবরাহ করে আসছিলেন। তার মাদক চক্রের কারণে এলাকার যুব সমাজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। তিনি বিভিন্ন সহজ-সরল যুবকদের প্রলোভন দেখিয়ে মাদক বেচাকেনায় ব্যবহার করতেন।
বক্তারা জানান, সরোয়ার তালুকদার নামে গ্রামের এক সহজ-সরল ব্যক্তিকে কৌশলে জড়িয়ে নাঈম তার কাছে ইয়াবা রেখে আসেন। পরে ৩ ডিসেম্বর সরোয়ারের বাড়িতে গিয়ে নাঈম ইয়াবা নিতে গেলে সরোয়ার বাড়িতে না থাকায় রাস্তায় তাদের দেখা হয়। ঠিক সেই সময় নৌবাহিনীর টহল টিম এসে সরোয়ারকে ৩২ ইয়াবাসহ আটক করে। কিন্তু নাঈম সুকৌশলে পালিয়ে যায় এবং ঘটনাস্থলে তার ব্যবহৃত গাড়ি ও ‘কালবেলা সমৃদ্ধি’ স্টিকার ফেলে রেখে যায়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নাঈমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ দীর্ঘদিনের হলেও এবার আনুষ্ঠানিক মামলা হওয়ায় তারা স্বস্তি পেয়েছে। তবে মামলা হওয়ার পরও তাকে গ্রেফতার না করায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামজুড়ে।
অতিরিক্ত বার্তা সম্পাদক শাকিল ফারুক বলেন,দুই মাস আগেই তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। পরে ১ ডিসেম্বর তাকে পত্রিকার দায়িত্ব থেকে পুরোপুরি অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাকে অফিসের বুম, আইডি কার্ড, স্টিকারসহ সব সরঞ্জাম ফেরত দিতে বলা হয়েছিল। মানববন্ধনে সরোয়ার তালুকদারের স্ত্রী ও বোন অভিযোগ করে বলেন, “নাঈম আমাদের স্বামী-ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ইয়াবা দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছে। সে এলাকায় প্রায়ই ইয়াবা বিক্রি করতে আসে। আমাদের পরিবারকে ধ্বংস করেছে। আমার স্বামীর মুক্তি চাই। নাঈমই আমার স্বামীকে বিপথে নিয়ে গেছে।
তালতলী থানার তদন্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন,নাঈমের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নাঈমকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তার বিরুদ্ধে আরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে, আমরা সবগুলো তদন্ত করছি।

আপনার মতামত লিখুন :