সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি। পটুয়াখালীর গলাচিপায় রেকর্ডীয় জমিতে প্রভাবশালীদের বাধা বৃদ্ধলোক মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। বৃদ্ধলোক হচ্ছেন উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের উত্তর পানপট্টি গ্রামের আঃ ওয়াজেদ মোল্লার ছেলে ফজলুর রহমান মোল্লা (১০৩)। স্থানীয়রা ও ফজলুর রহমান মোল্লা জানান, বাবা-দাদার পৈত্রিক সম্পত্তি থাকলেও তা খেতে পারছি না।
থাকতে হয় পাশ্ববর্তী উপজেলা রাঙ্গাবালীর চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরবেস্টিন গ্রামের আবাসন প্রকল্পে। দেশে কি বিচার নাই বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি আরও বলেন, স্ত্রী সন্তান থাকতেও আমার না খেয়ে থাকতে হয়। তখন আল্লাহর কাছে বলি বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি তুমি আমাকে খাওয়াবে না। এবিষয়ে ফজলুর রহমান মোল্লার স্ত্রী রিজিয়া বেগম (৯০) বলেন, আমার শ্বশুরের রেখে যাওয়া সম্পত্তি আমার স্বামী ভোগদখল করতে পারছেনা। কেননা আমার স্বামীর কোন টাকা পয়সা নেই। বৃদ্ধা মানুষ খুব কষ্ট করে সংসার চালাচ্ছি। কি করবো ভেবেই পাচ্ছি না। শতাধিকবার শালিসী হলেও কোনো শালিসী প্রতিপক্ষদের কোন কিছুই করতে পারে না।
আমার স্বামীর রেকর্ডীয় সম্পত্তি যার মৌজা- উত্তর পানপট্টি, জে.এল নং- ১২২, খতিয়ান নং- ২৫-১০২৯, নামজারি আবেদন নং- ৩৫৫৭৭৬৮, মোট জমির পরিমান- ৪২.৮৫ শতক। যা আমাদের খাজনা দেওয়া। ফজলুর রহমান মোল্লার ছেলে আল আমিন বলেন- মটর সাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। আমাদের টাকা-পয়সা কম থাকায় বাবার জমিতে যেতে পারি না। বাবার জমিতে এখন ধান রয়েছে, আমরা কাটতে গেলে প্রতিপক্ষরা আমাদেরকে মারধর করবে বলে প্রতিনিয়ত হুমকি প্রদান করছে। প্রতিপক্ষ কারা জানতে চাইলে আল আমিন বলেন- আমাদের একই গ্রামের শানু খা, জলিল খা, আলাউদ্দিন খা, রহিম মোল্লা, শাহজাহান গাজী, শাহাবুদ্দিন সিকদার আরও নাম না জানা অনেকে।
অনেক বছর পর্যন্ত আমাদের জমি অবৈধভাবে চাষাবাদ করে এখন নাকি তাদের জমি প্রতি এক ধরণের লোভ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা বাঁচতে চাই। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে ফজলুর রহমান মোল্লা একখানা দরখাস্ত করবেন বলে জানান। এবিষয়ে শানু খা জলিল খা, রহিম মোল্লা, শাহাবুদ্দিন সিকদার এদের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান। এই জমি জমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পানপট্টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাসুদ রানা বলেন আসলেই এই সম্পত্তির প্রকৃত মালিক ফজলুর রহমান মোল্লা। উনি গরীব থাকায় সঠিক বিচার কোথাও পাচ্ছেন না। আমার এই ইউনিয়ন পরিষদে তার বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার উভয় পক্ষকে ডাকলেও শানু খা গংয়েরা কেউই আসেনি।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদুল হাসান বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
গলাচিপা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেলে ঘটনা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আপনার মতামত লিখুন :