ঢাকা শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

পটুয়াখালীর গলাচিপায় কৃষকদের ওপর হামলার অভিযোগ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:৩৪ বিকাল

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরবাংলায় খাস জমিতে তরমুজ চাষ করাকে কেন্দ্র করে কৃষকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে। এসময় দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। গতকাল দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। তবে চরাঞ্চলে কৃষকদের ওপর হামলার ঘটনাটি জানাজানি হয় শুক্রবার। সংঘর্ষে আহত ২৫ জনকে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাছাড়া আরও অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

হামলায় আহত সাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, আমরা চরবাংলায় প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করছি। ওই এলাকার খাস জমিতে আমরা চরবাংলার মানুষেরাই চাষাবাদ ও বসবাস করি। গত তিন মাস আগে গলাচিপা উপজেলার ইউএনও স্যার ও এসিল্যান্ড স্যারও আমাদের ১৫৫ জন কৃষককে ওই জমি ইজারা দেয়। কিন্তু চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মতিন ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হাওলাদার আমাদের জমিতে চাষ করতে দেয়নি। এরপর কিছুদিন আগে ইউএনও এবং ওসি স্যার আমাদের নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ওই জমিতে আমরা চাষাবাদ করতে গেলে তারা হঠাৎ করে লোকজন নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে।

হামলায় আহত কৃষক জালাল তালুকদার বলেন, ‘ভূমি অফিস থেকে ইজারা পাওয়া জমিতে আমরা বৃহস্পতিবার দুপুরে চাষাবাদ ও ঘর নির্মাণ করতে গেলে চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান এবং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হাওলাদারের নেতৃত্বে আমাদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা হয়। আমরা প্রতিরোধের চেষ্টা করলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়।

হামলায় অভিযুক্ত চরবাংলা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হাওলাদার গণমাধ্যমকে বলেন, বিরোধপূর্ণ খাসজমিতে তাদের ঘর ছিল। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সেটি ভেঙে অন্যরা সেখানে ঘর নির্মাণ করছিল। এ কারণে তাদের প্রতিহত করা হয়েছে। চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস বলেন, হামলার ঘটনা আমাকে মোবাইলে জানিয়েছে। ঘটনার সময় আমি দশমিনাতে ছিলাম। হামলার ঘটনাটি শুনে আমি তখন ইউএনও স্যার এবং ওসি স্যারকে ফোনে জানিয়েছি। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি। তবে এ ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই।

গলাচিপা থানার ওসি মো. আশাদুর রহমান বলেন, চরবাংলার একটি গ্রুপ খাস জমি চাষ দিতে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে অনুমতি পায়, আরেক (কৃষকরা) গ্রুপ ভূমি অফিস থেকে ইজারা পায়। যা নিয়ে বেশকিছু দিন ধরে দুই গ্রুপের মধ্য বিরোধ চলছিল। বিরোধের এ ঘটনায় সংঘর্ষ হলে ইজারা পাওয়া কৃষকদের মধ্য ২৪ থেকে ২৫ জন আহত হন। তবে শোনা গেছে, অন্য পক্ষেরও বেশকিছু লোকজন আহত হয়েছেন।

গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহামুদুল হাসান বলেন, ‘বিরোধের বিষয়টি মীমাংসার জন্য গত শনিবার উভয়পক্ষকে নিয়ে বসা হয়েছে। ওই সময় কৃষকদের বিরোধী গ্রুপ অর্থাৎ যারা হামলা করেছে, তাদের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। ওই সিদ্ধান্তের সময় উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা (এ্যাসিল্যান্ড) ও থানার ওসি উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Link copied!