মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার: যৌতুকলোভী স্বামীর দাবীকৃত টাকা দিতে না পারায় ৪ বছরের কন্যা শিশু পরসী দাসকে নিয়ে নিরুপায় হয়ে পড়েছেন মা পলি রানী দাস। তার সন্তানের ভরণ পোষণ, স্ত্রীর সকল দায়ভার নির্বাহ করছেনা। অসহায় পলি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ত্রৈলক্ষ্য বিজয় গ্রামের মৃতঃ বিজয় সেনের কন্যা । সিলেট শিববাড়ী এলাকায় শাহজালাল প্লাষ্টিক এর স্বত্তাধিকারী নিষ্ঠুর পিতা মনিন্দ্র দাস (৩৪) দক্ষিন সুরমা থানার জৈনপুর শিববাড়ী এলাকার ময়না চন্দ্র দাসের পুত্র। জানা গেছে- বিগত ০৬/০২/২০১১ইং হিন্দু ধর্মীয় বিধি বিধান অনুয়ায়ী ৬২৮নং এফিডেভিট মূলে পলি- মনিন্দ্র বিবাহ বন্ধনে আবন্ধ হন। এর পর তাদের ঘরে ১কন্যা শিশু জন্মগ্রহন করে। মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহন করার কিছুদিন পূর্বে সে তার স্ত্রীকে নির্যাতন শুরু করে এবং ব্যবসার অজুহাতে স্ত্রীর পরিবারের কাছ থেকে নগদ ২ লক্ষ টাকা আদায় করে। পরবর্তীতে একইভাবে গত ২৭/১০/২০১৬ইং পুনরায় ২ লক্ষ টাকার জন্য নির্যাতন করে গুরুতর আহত করে।
এক কাপড়ে তার শশুরালয় থেকে বের করে দেয় এবং কন্যা শিশু পরসী দাসসহ পলিকে রাত ১০টার দিকে সিলেট বাস টার্মিনালে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় গত ০৬/১১/২০১৬ইং পলিকে তার শশুরালয়ে ফিরিয়ে নিতে মীমাৎসা বৈঠকে একই ভাবে স্বামী মনিন্দ্র দাস, দেবর সেন্টু দাস, শশুর ময়না চন্দ্র দাস, শাশুড়ী সুশান্তি বালা দাস, দেবর বলরাম দাস গংরা প্রকাশ্য যৌতুকবাবত ২ লক্ষ টাকা দাবী করেন। এ ঘটনায় নিরুপায় পলি মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা ( নং- ২৫৯/১৭) দায়ের করেন। এ মামলায় সে কিছু দিন জেল হাজতে ছিল। পরবর্তীতে জেল থেকে বের হয়ে পলিকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। নিরুপায় মা পলি রানী দাস জানান- আইনানুযায়ী সন্তানের ‘লালন পালণে’ মায়ের দায়ভার পিতার চেয়ে বেশী। কিন্তু, সন্তানের ভরণ পোষণের দায়ভার শুধুমাত্র পিতার। পরসীর পিতা মনিন্দ্র একজন নিষ্ঠুর পিতা- যে তার সন্তানের ভরণ পোষণ নির্বাহ করছেনা। এমনকি সন্তানের কোন খোজখবর পর্যন্ত নেয়না।
প্রতিদিন শিশুটি তার পিতাকে দেখতে চায়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শিশুটি তার পিতার সাথে মুঠোফোনে ভিডিও কলের মাধ্যমে যোগাযোগ করলেও নিষ্টুর পিতার মন গলেনি। তার ভরণ-পোষণ দেয়নি, তাকে একদিন দেখতেও আসেনি। তিনি আরো জানান, জেলা সদরে স্থানীয় একটি পাইভেট ক্লিনিকে চাকুরী করতেন। জীবনের গচ্ছিত সকল অর্থই আন্তসাৎ করেছেন তার স্বামী মনিন্দ্র। জীবন-সংসার সুন্দর করার লক্ষ্যে বিাবাহের পর স্বামীকে টমটম কেনার জন্য ৮০ হাজার টাকাসহ নগদ ১লাখ ২০ হাজার ও ঘরের রক্ষিত ৫ ভরি স্বর্ণ দেন। কিন্তু, দুঃখের বিষয় সে টাকা ও স্বর্ণ তিনি আন্তসাৎ করেছেন। এখন স্ত্রী-সন্তানদের খোজ-খবর নেননা। শিশুটি শুধু বাবা-বাবা বলে চিৎকার করে। বাবার জন্য বিভিন্ন বায়না ধরে। ভিডিও কলের মাধ্যমে বাবার সাথে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু তার মন গলেনি। স্বামী মনিন্দ্র একজন মাদকসেবী। তিনি ইতিপূর্বে সিলেট জৈনপুর এলাকার সুপর্ণা রাণী দাসকে বিবাহ করেন এবং প্রায় ৭ বছর ঘর সংসার করে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করে বিদায় করে দেন।