মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার: ভারতের ত্রিপুরা ও আসাম সাথে ব্রিটিশ আমল থেকে কুলাউড়া জংশন ষ্টেশন থেকে শাহবাজপুর হয়ে ভারতের মহিষাশন ষ্টেশন পর্যন্ত রেল লাইন চালু ছিল।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে কয়েক বছর এ রেল পথে ভারত থেকে কয়লা আমদানী করা হতো। পরে জরাজীর্ণ রেল লাইনের কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশ ও ভারতের সরকার প্রধানে ইচ্ছায় ট্রেন যোগাযোগ চালুর লক্ষ্যে প্রায় ১৭ বছর পর অবশেষে কুলাউড়া শাহবাজপুর রেললাইনের নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে। এক মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে। গত ১৩ জানুয়ারি বিকেলে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলয়ী জোনের জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল হাইর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল বন্ধ হওয়া কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইন পরিদর্শণ শেষে কুলাউড়া জংশন স্টেশনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে একথা জানান। তিনি আরো জানান, জানুয়ারি মাসের শেষে অথবা ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই কুলাউড়া শাহবাজপুর রেললাইনের নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
এতে ব্যয় হবে ৫শত ৫৫ কোটি টাকা। ভারতীয় নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কলকাতার কালিন্দি রেল নির্মাণ কোম্পানী এই রেললাইনের নির্মাণ কাজ করবে। ব্রডগেজ এই রেললাইনটি চালু হলে কুলাউড়া থেকে শাহবাজপুর পর্যন্ত ৫টি ট্রেন চলাচল করবে। লোকাল ট্র্রেন ছাড়াও আন্ত:নগর ট্রেন চলবে। সেই সাথে ভারতীয় ট্রেনও চলবে এই পথে। ট্রেনের গতি হবে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। বন্ধ থাকাকালিন সময়ে রেলওয়ের জবর দখলকৃত সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের লক্ষ্যে রেলওয়ের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে নোটিশ দেয়া হয়েছে। স্বউদ্যোগে অবৈধ স্থাপনা সরানো না হলে অভিযান চালিয়ে একযোগে সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। পরিদর্শণকালে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলয়ী জোনের জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল হাই এর সাথে ছিলেন কুলাউড়া শাহবাজপুর ট্রেন লাইন বাস্তবায়নের প্রকল্প পরিচালক ও রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের এসিই মো. তানভিরুল ইসলাম ও রেলওয়ের ঢাকার ডিইএন মো. আহসান জাবির।
রেলওয়ে সুত্র জানায়- ২০০২ সালের জুন মাসে বন্ধ হওয়ায় এই রেললাইনটি বিগত ১৭ বছর বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ এই সময়ে রেললাইনটি চালুর ব্যাপারে শুধু প্রতিশ্রুতিই দেয়া হয়েছে। কিন্দু বাস্তবে কোন কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এর ফলে রেললাইনের কোটি কোটি টাকার সম্পদ লুটপাট এবং জবরদখল হয় রেলের ভুমি। দীর্ঘ ১৭ বছর মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। উল্লেখ্য- ইতিপূর্বে ২০১৬ সালের ২৭ জুন ভারতের হাই কমিশনার শ্রী হর্ষবর্ধন শ্রিংলা কুলাউড়া রেলওয়ে জংশনসহ প্রকল্প এলাকা সরেজমিন পরিদর্শণ করেন। এর আগে ২০১৫ সালের ৬ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কুলাউড়া-শাহবাজপুর ব্রডগেজ রেললাইনের ভিত্তিপ্র্রস্তর স্থাপন করেন।