বাবুনগরীর দাবি, এই মিছিল হিন্দুয়ানি সংস্কৃতি এবং এটি জোর করে রাষ্ট্র চাপিয়ে দিয়েছে দাবি করে এই শোভাযাত্রায় যোগ না দেয়ার আহ্বানও জানিয়েছে হেফাজত।
‘ভিন্ন ধর্মের’ রীতিনীতি দেশের শতকরা ৯২ জন মুসলমানের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালালে পরিণতি শুভ হবে না বলেও জানিয়ে দেন বাবুনগরী। বলেন, ‘ইসলামি তাহজীব-তামাদ্দুন, সভ্যতা-সংস্কৃতি ধ্বংস করে বিজাতীয় কালচার মুসলমানরা মেনে নিতে পারে না। মিছিলে অংশগ্রহণকারী ছেলে মেয়েরা অশ্লীল পোশাক পরে অশালীন নাচানাচি করে বলেও দাবি করা হয়েছে ২০১৩ সালের ৫ মে ১৩ দফা দাবিতে মতিঝিলে তাণ্ডব চালানো সংগঠনের বিবৃতিতে।
নববর্ষ উদযাপনে মঙ্গল শোভাযাত্রা এরই মধ্যে বৈশ্বিক স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক সংগঠন ইউনেস্কো একে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এবারও মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। যদিও কোটা আন্দোলনের সময় এই শোভাযাত্রার জন্য নির্মিত নানা প্রতিকৃতি ভাঙচুর করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এই আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর অনুসারীরা এই কাজ করেছে।
হেফাজতের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পয়লা বৈশাখের দিন বাংলা নববর্ষ উদযাপনের নামে বিভিন্ন জীবজন্তুর মূর্তি নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা পালন করা মুসলমানদের ইমান-আক্বিদাবিরোধী একটি অনৈসলামিক ও বিজাতীয় সংস্কৃতি। নতুন বছরের প্রথম দিনে নারী পুরুষের মুখে উল্কি আঁকা, বড়বড় পুতুল, হুতোম পেঁচা, হাতি, কুমির সাপ, বিচ্ছু, ও ঘোড়াসহ বিভিন্ন জীব-জন্তুর মুখোশ পরা, প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ একসঙ্গে অশালীন পোশাক পরে অশ্লীল ভঙ্গিতে ঢোল বাদ্যের তালে তালে নৃত্য করে র্যালি করার হিন্দুয়ানী যে রীতি রাষ্ট্রীয়ভাবে মুসলমানদের ওপর জোর করে চালু করা হচ্ছে, তা ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম।
ইউনেস্কো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে কেবল চারুকলা ইনস্টিটিউট না। সারা দেশেই এই মিছিল বের করা হয়। দেশের মূল ধারার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই মঙ্গল শোভযাত্রা বের করার নির্দেশ আছে সরকারের। এই নির্দেশদাতার কাছে হেফাজত নেতা বাবুনগরী প্রশ্ন রাখেন, ‘শোভাযাত্রায় কার কাছে মঙ্গল ও কল্যাণ কামনা করা হচ্ছে? জীবজন্তু, বন্যপ্রাণী ও দেবদেবীর মূর্তি কী মানুষের কোন কল্যাণ করতে পারে? মুসলমানদেরকে একমাত্র আল্লাহর কাছে কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করতে হবে উল্লেখ করে বাবুনগরী বলেন, ‘স্কুল কলেজের মুসলিম শিক্ষার্থীদেরকে ইমান আক্বিদাবিরোধী সংস্কৃতি পালনে রাষ্ট্র কখনো বাধ্য করতে পারে না।
এটা সংবিধানের মৌলিক নীতিমালা বিরোধী। বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় নারীদের ওপর যৌন হয়রানি নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা ও চলাফেরার কুফল বলেও দাবি করেছে হেফাজত।